ভগবদগীতায় ভগবান শ্রীকৃষ্ণ বলেছেন যে, যারা আমাকে নিবেদন না করে খাদ্য
গ্রহণ করে তারা পাপ ছাড়া আর কিছুই ভক্ষন করে না। আর যারা ভগবানকে নিবেদিত
খাদ্যের অবশিষ্টাংশ গ্রহণ করে তারা সকল পাপমূলক প্রতিক্রিয়া হতে মুক্ত থাকে।
শরীর রক্ষার জন্য আমাদের সকলকে আহার গ্রহণ করতে হয়। তাই যিনি আমাদের
সবকিছু দিয়েছেন তাকে প্রথমে খাদ্য নিবেদন করা উচিৎ। এটা পরীক্ষিত সত্য যে,
ভগবানের উদ্দেশ্যে নিবেদিত খাদ্য অর্থাৎ প্রসাদের বিশেষ ধরনের স্বাদ হয় যা অত্যন্ত
বিলাসবহুল রেস্তোরাঁ খাবারের স্বাদ পাওয়া যায়না। প্রসাদ গ্রহণ করার ফলে
মানুষের গােটা অস্তিত্ব পবিত্র হয়ে যায় এবং স্বাস্থ্য ভাল থাকে। ঈশ্বরের আশীর্বাদসূচক
এই অভিজ্ঞতা ভক্তির বহিঃপ্রকাশ। শুধুমাত্র মহাঋষিদের ভুক্তাবশেষ ভক্ষন করে
এক চাকরাণীর পুত্র পরজন্মে নারদ মুনি হয়েছিলেন। প্রসাদের গুণ এত ব্যাপক।
সন্দেহ জনক খ , ৪3/125 ভক্তগণের সতর্ক থাকা উচিৎ। যদি সােয়াবিন খেতেই হয় তাহলে : : কিনে জলে ভিজিয়ে গ্রাইন্ডিং করে বড়া বানিয়ে সুজি তৈরি করে ভগবানকে ভােগ লাগিয়ে গ্রহণ করা যায়। পেঁয়াজ, রসুন ও মসুর ডাল আহার করা ভক্তদের সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। এগুলো শ্রীকৃষ্ণকে নিবেদনযোগ্য নয়। এগুলো আহার করলে জড়া প্রকৃতির নিকৃষ্টতম ণ্ডণ তমোগুণ চেতনা আচ্ছন্ন হয়ে পড়ে। এমনকি চা কফির মত হালকা নেশা ও বর্জনীয়, কেননা, এগুলো স্বাস্থ্যের প্রতিকূল, অপরিচ্ছন্নতা যুক্ত এবং অনাবশ্যক। এগুলো বদ অভ্যাস গড়ে তোলে। আর চা-কফি কখনো ভগবানকে নিবেদন করা যায় না। চকলেট ক্যাফেইন থাকে, তাই এটা এক ধরনের লঘু মাদকদ্রব্য। চকলেট অস্বাস্থ্যকর, কারণ এতে রক্ত দূষিত হয় ও শরীরে কালাে ছাপ পড়তে পারে; আর চকলেট নিবেদনযোগ্য নয়। কিছু ভক্ত অবশ্য চকলেট খাওয়া যেতে পারে বলে মনে করেন, তবু এ-ব্যাপারে রক্ষণশীল হওয়াই ভাল। চকলেট ছাড়াই আমরা বেঁচে থাকতে ও কৃষ্ণভাবনা অর্জনের পথে এগিয়ে যেতে পারি। আর চকলেটকে খাদ্য তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা তো কৃষ্ণের সন্তুষ্টি বিধানের জন্য নয়, কেবল আমাদেরই ইন্দ্রিয় তৃপ্তির জন্য—তাই না?
এ অভক্তদের তৈরী বাজারের নিরামিষ খাদ্য-দ্রব্যাদি সম্পর্কে ভক্তদের খুব সতর্ক হওয়া উচিত। যেমন বাজারে রুটি, বিস্কুট, আইসক্রিম, কেক আদি খাবার গুলিতে প্রায়ই ডিম থেকে তৈরি এক রকম উপাদান থাকে। কখনো কখনো খাবারের প্যাকেটের উপর লেখা উপাদানের তালিকায় বিভিন্ন সব রাসায়নিক দ্রব্যের নাম লেখা থাকে। এসব খাবার নিরামিষ হতে পারে, আবার নাও হতে পারে। এরকম ক্ষেত্রে এগুলাে এড়িয়ে চলাই ভাল।
বেদে বলা হয়েছেঃ “আহার শুদ্ধো সত্তশুদ্ধিঃ |
যদি কারও আহার শুদ্ধ হয়,
তাহলে তার সমগ্র চেতনা শুদ্ধ হয়ে ওঠে।
ঐতিহ্যগতভাবে যারা বৈদিক সংস্কৃতির অনুগামী ছিলেন, তারা তাদের আহারের
বিষয়ে অত্যন্ত কঠোর ছিলেন। কারণ, আহার্য যিনি রন্ধন বা প্রস্তুত করেন, তার
চেতনা খাদ্যে সঞ্চারিত হয়। তাই ভক্তরা যদি এমন সব ব্যক্তির রান্না করা খাবার
আহার করেন যাদের চিত্ত ও ব্যবহার দৃষিত, তাহলে তাদের চেতনাও কলুষিত হয়ে
পড়বে— অজান্তে রাধুনীর মানসিকতা আহারকারীদের চেতনায় সঞ্চারিত হবে।
এই সঙ্গে রন্ধনকারীর পাপকর্মফলও ভােগ করতে হয়। শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভু বলেছেন
বিষয়ীর অন্য খেলে মলিন হয় মন।
মলিন মন হৈলে নহে কৃষ্ণের স্মরণ।।
চৈতন্যচরিতামৃত, অন্ত, ৬-২৭৮
সেজন্য ভক্তরা কেবল কৃষ্ণপ্রসাদ গ্রহণের অভ্যাস করেন।
প্রসাদ শুধু যে কর্ম ফলের বন্ধনমুক্ত করে তাই নয়, কৃষ্ণপ্রসাদ চেতনাকে কলুষমুক্ত
ও বিশোধিত করে। কেননা, কৃষ্ণভাবনাময় ভক্তদের দ্বারা প্রেম ও ভক্তির সাথে সেই
খাবার রান্না করা হয়েছে ও শ্রীকৃষ্ণে নিবেদিত হয়েছে। কৃষ্ণভক্তিতে দ্রুত উন্নতি
সাধন করতে হলে আহারের ক্ষেত্রে কঠোরতার আবশ্যকতা রয়েছে। সবচেয়ে ভাল
হচ্ছে জীবনধারাকে এমন ভাবে নিয়ন্ত্রিত করা, যাতে সর্বদা কেবল কৃষ্ণপ্রসাদ গ্রহণ
করা সম্ভব হয়।
অবশ্য সব ভক্তের পক্ষে এমনটা করা সবসময় সম্ভব নাও হতে পারে। কোন
কর্মব্যস্ত মানুষ, কিংবা তাকে প্রায়ই বাইরে ঘুরতে হয়, তারা অনেক সময় বাইরের
খাবার কিনে খেতে বাধ্য হন। যদি খাবার কিনতে হয়, তাহলে সেক্ষেত্রে সবচেয়ে
ভাল হচ্ছে ফল, চিড়া, মুড়ি ও শুকনাে জাতীয় খাবার কেনা। দুধ ও দুধের তৈরী
খাবারও (দই, মিষ্টি, পনির, ছানা ইত্যাদি) কেনা যেতে পারে; কারণ অভক্তদের দ্বারা
তৈরী হলেও দুধ ও দুগ্ধজাত দ্রব্য সবসময় শুদ্ধ থাকে। বাইরের রেস্তোরায় কোনরূপ
আহার গ্রহণ ভক্তদের পক্ষে অনুচিত।
সম্প্রতি ভারতজুড়ে ব্যাপকভাবে প্রচার করা হচ্ছে যে ডিম হল একটি নিরামিষ
খাদ্য। জীব বিজ্ঞানের দৃষ্টিতে নিষিক্ত (fertilized) ডিম হল ভ্রুণ (যা আসলে
তরল মাংস); আর অনিষিক্ত (unfertilized) ডিম হল মুরগীর রজঃস্রাব
(menstruation)।শাস্ত্রে স্পষ্টতই ডিম কি আমিষ খাদ্য বলা হয়েছে। সেজন্য
তথাকথিত সব বিজ্ঞানী, রাজনৈতিক বা ডিম বিক্রেতা গণের উদ্দেশ্যপ্রণোদিত প্রচার ,
বিভ্রান্ত হওয়া উচিত নয়।
কর্মফলের নিয়ম অনুসারে অভক্তের রান্না করা খাদ্যবস্তু বিশেষভাবে কলুষিত,
কেন না, ভগবানকে অর্পিত না হওয়ার জন্য তা আমাদের কর্মফলের বন্ধনে আবদ্ধ
করে। সেজন্য তাদের তৈরী ভাত-রুটি মাঝে মধ্যে আহার করলে তা ভক্তিলাভের
প্রতিবন্ধক হবে।
বাজারে কেনা সয়াবিন বড়ি রান্নার ব্যাপারে সন্দেহ রয়েছে। অনেকে মনে করে
যে তাতে ভক্তি প্রতিকূল দ্রব্য মেশানো থাকে।সন্দেহ জনক খ , ৪3/125 ভক্তগণের সতর্ক থাকা উচিৎ। যদি সােয়াবিন খেতেই হয় তাহলে : : কিনে জলে ভিজিয়ে গ্রাইন্ডিং করে বড়া বানিয়ে সুজি তৈরি করে ভগবানকে ভােগ লাগিয়ে গ্রহণ করা যায়। পেঁয়াজ, রসুন ও মসুর ডাল আহার করা ভক্তদের সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। এগুলো শ্রীকৃষ্ণকে নিবেদনযোগ্য নয়। এগুলো আহার করলে জড়া প্রকৃতির নিকৃষ্টতম ণ্ডণ তমোগুণ চেতনা আচ্ছন্ন হয়ে পড়ে। এমনকি চা কফির মত হালকা নেশা ও বর্জনীয়, কেননা, এগুলো স্বাস্থ্যের প্রতিকূল, অপরিচ্ছন্নতা যুক্ত এবং অনাবশ্যক। এগুলো বদ অভ্যাস গড়ে তোলে। আর চা-কফি কখনো ভগবানকে নিবেদন করা যায় না। চকলেট ক্যাফেইন থাকে, তাই এটা এক ধরনের লঘু মাদকদ্রব্য। চকলেট অস্বাস্থ্যকর, কারণ এতে রক্ত দূষিত হয় ও শরীরে কালাে ছাপ পড়তে পারে; আর চকলেট নিবেদনযোগ্য নয়। কিছু ভক্ত অবশ্য চকলেট খাওয়া যেতে পারে বলে মনে করেন, তবু এ-ব্যাপারে রক্ষণশীল হওয়াই ভাল। চকলেট ছাড়াই আমরা বেঁচে থাকতে ও কৃষ্ণভাবনা অর্জনের পথে এগিয়ে যেতে পারি। আর চকলেটকে খাদ্য তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা তো কৃষ্ণের সন্তুষ্টি বিধানের জন্য নয়, কেবল আমাদেরই ইন্দ্রিয় তৃপ্তির জন্য—তাই না?
এ অভক্তদের তৈরী বাজারের নিরামিষ খাদ্য-দ্রব্যাদি সম্পর্কে ভক্তদের খুব সতর্ক হওয়া উচিত। যেমন বাজারে রুটি, বিস্কুট, আইসক্রিম, কেক আদি খাবার গুলিতে প্রায়ই ডিম থেকে তৈরি এক রকম উপাদান থাকে। কখনো কখনো খাবারের প্যাকেটের উপর লেখা উপাদানের তালিকায় বিভিন্ন সব রাসায়নিক দ্রব্যের নাম লেখা থাকে। এসব খাবার নিরামিষ হতে পারে, আবার নাও হতে পারে। এরকম ক্ষেত্রে এগুলাে এড়িয়ে চলাই ভাল।
www.krishnokotha.blogspot.com
উত্তরমুছুন